
স্টাফ রিপোর্টার:
ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে উচ্ছ্বাসে মেতেছে রাজশাহী কলেজ। কোকিলের মধুর সুর, রঙিন ফুলের ছোঁয়া আর প্রকৃতির সজীবতায় পুরো ক্যাম্পাসে লেগেছে বসন্তের রঙ। এই প্রাণোচ্ছল উৎসবকে আরও বর্ণিল করে তুলতে বাংলা বিভাগের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন “অগ্নীবীণা সাহিত্য পরিষদ” আয়োজন করেছে নান্দনিক চিত্রাঙ্কন কর্মসূচি।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় রাজশাহী কলেজের রজনীকান্ত সেন মঞ্চের সামনে শুরু হয় এই বিশেষ আয়োজন। সংগঠনের ২৫ জন শিক্ষার্থী দুই দিনব্যাপী কলেজ প্রাঙ্গণকে বসন্তের রঙে রাঙিয়ে তুলবেন। তারা দেয়ালে ফুটিয়ে তুলছেন বাংলা সংস্কৃতির চিরন্তন সৌন্দর্য, কবি-সাহিত্যিকদের প্রতিচ্ছবি এবং বসন্ত উৎসবের আবহ।
এই আয়োজনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অগ্নীবীণা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ফাহমিদা আক্তার রেখা, আর মূল কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন সাংগঠনিক সম্পাদক মোছাঃ রাবেয়া খাতুন। সংগঠনের উপদেষ্টা ও বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইকবাল হোসেন শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করছেন এবং সার্বিক তত্ত্বাবধান করছেন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোছাঃ রাবেয়া খাতুন বলেন,
“প্রতিবছর অগ্নীবীণার সদস্যরা বসন্তকে বরণ করতে এই আয়োজন করে। এটি আমাদের ঐতিহ্যবাহী কর্মসূচি। আমরা রাজশাহী কলেজের সৌন্দর্য আরও ফুটিয়ে তুলতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করি।”
উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খলিল উদ্দীন বলেন,
“পহেলা ফাল্গুনের আগমনে লাল দালানের ঐতিহ্যবাহী ক্যাম্পাস যেন রঙিন এক স্বপ্নরাজ্যে পরিণত হয়। সুসজ্জিত আলপনা, বসন্তের মিষ্টি সুর, আর তরুণদের উচ্ছ্বাস মিলিয়ে এক অপূর্ব আবহ সৃষ্টি হয়, যা আমাদের হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলে।”
এই বছর কলেজের দেয়াল ও বিভিন্ন স্থান সেজেছে বর্ণিল চিত্রকর্মে। কোথাও ফুটে উঠেছে গ্রামবাংলার বসন্ত উৎসব, কোথাও বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তিদের প্রতিচ্ছবি। পলাশ, শিমুল আর কৃষ্ণচূড়ার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে আঁকা দৃষ্টিনন্দন আলপনা কলেজের পরিবেশকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে।
অগ্নীবীণা সাহিত্য পরিষদের উপদেষ্টা মো. ইকবাল হোসেন বলেন,
“এটি আমাদের বার্ষিক কর্মসূচির একটি অংশ। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা তাদের সৃজনশীলতা ও সাংস্কৃতিক চর্চাকে আরও প্রসারিত করুক। তবে এই কার্যক্রমকে আরও বড় পরিসরে আয়োজন করতে অর্থায়নের প্রয়োজন। যদি কোনো ফান্ড বা পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া যায়, তাহলে আমাদের কার্যক্রম আরও সুন্দরভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে।”
এই মনোমুগ্ধকর আয়োজনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস নিয়ে অংশ নিচ্ছেন। কেউ ছবি তুলে রাখছেন, কেউবা বসন্তের আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে স্মরণীয় মুহূর্তগুলো উপভোগ করছেন।
বসন্তের রঙে সেজে ওঠা রাজশাহী কলেজ যেন হয়ে উঠেছে এক জীবন্ত ক্যানভাস, যেখানে প্রকৃতি আর শিল্প একসঙ্গে কথা বলে।