শুক্রবার | ২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাঘায় জমে উঠেছে পশুর হাট, দাম বাড়াচ্ছে পাইকারী ব্যবসায়ীরা

ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে বাঘা উপজেলায় অবস্থিত দু’টি হাট-সহ পুরো রাজশাহী, নাটোর ও পাবনা অঞ্চল জুড়ে অসংখ্য পশুহাট। তবে এসব হাটের মধ্যে গরু-ছাগল আমদানী করার দিক থেকে সবচেয়ে গুরুত্ব বহন করে চলেছে বাঘা উপজেলার সীমান্তবর্তী বির্স্তীর্ণ পদ্মার চরাঞ্চলের খামারুরা। সেখানে প্রত্যেক বাড়িতে রয়েছে প্রায় ৪-৫ টি করে বিভিন্ন জাতের গরু এবং ৮-১০ টি ছাগল। বর্তমানে এ সকল গরু-সহ সমতল এলাকায় পালিত হাজার-হাজার গরু মহিষ স্থানীয় চাহিদা পূরনের পাশা-পাশি পাঠানো করা হচ্ছে রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন শহরে। তবে গত বারের চেয়ে এবার পশুর দাম অনেক বেশী বলে মন্তব্য করেছেন ক্রেতা ও সাধারণ জনগণ। কোরবানীর গরু কিনতে আসা ক্রেতারা বলছেন, বিভিন্ন শহর থেকে বড়-বড় গরু ব্যবসায়ীরা এ অঞ্চলের হাটে এসে সকল প্রকার পশু ক্রয় করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, সামনে মাসে অনুষ্ঠিত হবে ঈদুল আযহা। ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর জন্য আত্মত্যাগ ও বিশ্বাসের প্রতীক। এই দিনে কোরবানি দেওয়ার মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে থাকি। ঈদের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই ব্যস্ততা বাড়ছে ব্যবসায়ীদের। প্রতিবছর ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে রাজশাহীর বাঘা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করতো ভারতীয় গরু। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত সেটি লক্ষ্য করা যায়নি। ফলে বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে এবার গরুর দাম অনেক বেশি হবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। তার পরেও অত্র উপজেলার রুস্তমপুর ও চন্ডিপুরের হাটে পশু আমদানি চোখে পড়ার মতো।

এ অঞ্চলের পশু ব্যবসায়ীদের মতে, বাঘা উপজেলার দুটি পশু হাটে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা গরু কিনতে আসেন। এই মুহুর্তে ঢাকা থেকে আগত ব্যবসায়ীদের কারণে গরুর দাম অনেকটা বেশি । তবে ঈদের তিন-চার দিন আগে বহিরাগত ব্যবসায়ীদের চাপ কমলে দাম কিছুটা হলেও কমতে পারে বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।

বাঘার গরু ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান জানান, রাজশাহী, নাটোর ও পাবনা’র একটি অংস নিয়ে সপ্তাহ জুড়ে এই অঞ্চলে গরুর হাট বসে। এর মধ্যে- রাজশাহীর সিটি ও কাটাখালি হাট-সহ পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরের হাট বসে প্রতি শনিবার, বাঘার রুস্তমপুরে বুধবার এবং চন্ডিপুরে হাট বসে শুক্রবার। অপর দিকে নাটোর শহরের তেবাড়িয়ায় প্রতি রবিবার বসে জেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট। এছাড়া বড়াইগ্রাম উপজেলার মৌখাড়া হাট শুক্রবার, সিংড়া ফেরিঘাটে সোমবার ও বৃহস্পতিবার, বাগাতিপাড়ার পেড়াবাড়িয়া,গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় এবং গোপালপুর উপজেলার মধুবাড়ী ও পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় সোমবার বসে বিশাল গরু-ছাগলের হাট।

সরেজমিন গত শুক্রবার বাঘার চন্ডিপুর ও বুধবার রুস্তমপুর গরুহাট ঘুরে দেখা গেছে, বেচা-বিক্রি ভালই জমে উঠেছে। সকাল ১০ থেকে গরু ছাগল আসতে শুরু করছে হাটে। এরপর একটানা দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে অসংখ্য গরু-ছাগলের আমদানি ও বেচা-বিক্রী। বিক্রেতারা বলছেন , এ বছর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে গরু আমদানি হয়নি। ফলে স্থানীয় চাহিদা পুরন করছে বাঘা উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে পোশা দেশী গরু। তাদের মতে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতা আসছেন এসব হাটে। এরপর গরু ও ছাগল দেখে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে তারা সেগুলো নিয়ে যাচ্ছেন রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

ঢাকার গরু ব্যবসায়ী করিম মিঞা জানান, গরুর ব্যবসা অনেকটা ভাগ্যের উপরেও নির্ভর করে। তিনি বলেন, গত বছর ঈদ উল আযহার পূর্বে তিনি ৪০ টি গরু কিনে ব্যবসায় লস করে ছিলেন। কারন সেইবার গরু আমদানি অনেক বেশি ছিল। এ দিক থেকে তিনি আগের বছর ২০ টা গরুতে খরচ বাদে প্রায় এক লক্ষ টাকা লাভ করে ছিলেন। তিনি ক্ষোভের সাথে জানান, রাস্তায় পুলিশের চাঁদা-বাজির কারণে লাভের অংশ অনেকটা ফুরিয়ে যায়। তিনি এ বিষয়ে সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন ।

রাজশাহী নিউজ টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

হাইলাইটস

সাম্প্রতিক

Copyright © 2025 RajshahiNewsTV. All rights reserved. Developed by CITNBD