শুক্রবার | ২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানে পানি বন্ধ হলে ভারতের পানি আটকে দিতে পারে চীন

নিউজ ডেস্ক: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভারতের একতরফা সিদ্ধান্তে সিন্ধু নদের পানি চুক্তি স্থগিত করার পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলেছে পাকিস্তান।

শনিবার (২৪ মে) ইনস্টিটিউট লাইব্রেরিতে ‘পাকিস্তান-ভারত সংঘাত’ শীর্ষক একটি ইন্টারেক্টিভ অধিবেশনের আয়োজন করে পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (পিআইআইএ)। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।

পিআইআইএ’র চেয়ারপারসন ড. মাসুমা হাসান সেখানে বলেন– সাম্প্রতিক সংঘাতের বিষয়ে বিভিন্ন কণ্ঠস্বর, বিশেষ করে তরুণদের কণ্ঠস্বর শোনার প্রয়োজন ছিল। তাই তারা তাদের গবেষণা সহকারীদের সাথে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন, যাতে তারা তাদের মাধ্যমে চিহ্নিত সংঘাতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারেন এবং দর্শকরা যাতে সেখান থেকে বিষয়টি বুঝতে পারেন।

গত এক মাসের ঘটনাবলি তুলে ধরে তিনি আরও স্মরণ করিয়ে দেন, ভারত কীভাবে আচমকা কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই ২২ এপ্রিলের পেহেলগাম হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে।

ড. মাসুমা আরও বলেন, এরপর ভারত ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে এবং পাকিস্তান ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি স্থগিত করে। ৭ মে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিন্দুর’ অভিযান শুরু করে। দেশ রক্ষায় পাকিস্তানও ১০ মে প্রতিশোধ নেয়। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি হয়।

গবেষণা সহকারী মোহাম্মদ উসমান ‘ওয়াটার অ্যাসেটস এন্ড রিসোর্সেস’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ভারত যদি পাকিস্তানে পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেয়, তাহলে তার নিজস্ব উচ্চ অঞ্চলই প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, যদি তারা (ভারত) শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ করে দেয়, তাহলে এটি আমাদের জন্য উদ্বেগের বিষয় হতে পারে। কারণ, পানির প্রবাহ কম এবং সংরক্ষণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের কৃষকদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, যার কারণে ফলন কম হতে পারে।

পাকিস্তানের এই গবেষক বলেন, ভারত পানি বন্ধ করে দিলে এর জন্য আমাদের উল্লেখযোগ্য অবকাঠামোর প্রয়োজন হবে, যা নির্মাণে বছরের পর বছর সময় লাগবে এবং বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারও লাগবে।

মোহাম্মদ উসমান বলেন, পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের কথা বলতে গেলে, যখন উচ্চ অববাহিকার অঞ্চল পানির প্রবাহ আটকে দেয় এবং হঠাৎ করে নিম্ন অববাহিকার অঞ্চলকে অবহিত না করেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পানি ছেড়ে দেয়, তখন বড় বন্যা দেখা দেয়। পাকিস্তান ও ভারতের ক্ষেত্রে পাকিস্তান হলো নিম্ন অববাহিকার অঞ্চল এবং ভারত উচ্চ অববাহিকার। কিন্তু চীন ও ভারতের ক্ষেত্রে, চীন হলো উচ্চ অববাহিকার এবং ভারত হলো নিম্ন অববাহিকার, বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্রে। ফলে চীনও ভারতের পানি আটকে দিতে পারে।

এ সেমিনারে আরও নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। যার মধ্যে একটি আলোচনায় বলা হয়, নিজের অভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্য অন্যকে দোষারোপ করা খুব সহজ, যা ভারত পহেলগামে হামলার পর করেছে।

রাজশাহী নিউজ টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

হাইলাইটস

সাম্প্রতিক

Copyright © 2025 RajshahiNewsTV. All rights reserved. Developed by CITNBD