
স্টাফ রিপোর্টার:
রাজশাহীর চারঘাটে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে। সোমবার (১৯ মে) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার নাওদাড়া গ্রামে দুইটি বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়।
ভুক্তভোগী মিঠু সরকার ও সানাউল্লাহর বাড়িতে একযোগে হামলা চালায় ‘সিরিখন্ডি মুজিব নগর’ নামে পরিচিত একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র—হাসুয়া, রামদা, চাইনিজ কুড়াল এবং পিস্তল নিয়ে হঠাৎ করেই হামলা চালায়।
হামলার সময় দুই বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। মিঠু সরকারের দাবি, ব্যবসা শুরু করার জন্য গাড়ি বিক্রি করে ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমিয়েছিলাম, সেসবই তারা লুটে নেয়। আমার স্ত্রীর গলা থেকে পিস্তল ঠেকিয়ে দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
একই সময় পাশের বাড়ি সানাউল্লাহর বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। পাশাপাশি সাদিকুল নামে একজনের খামার থেকে ৪টি গরু নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। হামলায় বাধা দিতে গেলে দুইজন এলাকাবাসীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে আহতদের মধ্যে একজন চারঘাটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সাদিকুল রাকেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় এক নারী বাসিন্দা বলেন, বাচ্চাদের নিয়ে ঘরে লুকিয়ে ছিলাম। বাইরে শুধু চিৎকার আর অস্ত্রের ঝনঝনি।
আরেক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, এত লোক একসাথে, এত অস্ত্র দেখে মনে হচ্ছিল যেন সিনেমার মতো কিছু ঘটছে। আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, দোষীদের দ্রুত বিচার হোক।
উল্লেখ্য, হামলার আগের দিন (১৮ মে) নাওদাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ধূমপানকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে সিরিখন্ডি এলাকার নবম শ্রেণির ছাত্র দুর্জয় ও নাওদাড়ার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রিজভী। এই ঘটনার জেরে স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা হলেও শেষ পর্যন্ত তা বড় ধরনের সহিংসতায় রূপ নেয়।
এই বিষয়ে নাওদাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, “আমরা বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু এলাকার কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোকজন নিজেদের মতো করে প্রতিশোধ নেয়।
এই ঘটনায় চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


